যুগে যুগে আসাদ দূর করবে ফ্যাসিবাদ

আসাদ দিবসের মিছিল

দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও আত্মমর্যাদার লড়াইয়ে শামিল হোন

স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও এখনও গণতান্ত্রিক শিক্ষা ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এমনকি নাগরিকের নূন্যতম ভোটাধিকারও কেড়ে নেয়া হয়েছে। জাতীয় সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। এমন পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের লড়াই করতে হচ্ছে। ভোটের অধিকার, কাজের অধিকার, ভাতের অধিকার, শিক্ষার অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এখন একসূত্রে গেঁথে আছে। ৬৯’ র গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ আসাদরা বর্তমানে লড়াইয়ের দিশা আঁকারে হাজির হয়েছেন। 

 

পাকিস্থানের স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এদেশের আপামর জনতা বুক চিতিয়ে লড়াই করেছিলেন। তখন গণতন্ত্র, স্বায়ত্তশাসন, কৃষক, শ্রমিকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট দাবির ভিত্তিতে ১১ দফা দাবিতে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়। শুরু হয় গণ আন্দোলন। এই আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদুজ্জামান আসাদ। 

 

ছাত্র হওয়া স্বত্বেও আসাদ মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে শ্রমিক-কৃষকদের সংগঠিত করেন, নেতৃত্ব দেন। আর এজন্য পুলিশ টার্গেট করে আসাদকে গুলি করে। 

আসাদের মৃত্যুতে দাবানলের সৃষ্টি হয়, যার পরিণতিতে ঘটে ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান। এবং  

এই অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়েই আইয়ুব খানের পতন ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করা হয়। অভ্যুত্থানে শ্রমিক ও কৃষকের মধ্যেও বিপুলভাবে জাগরণ সৃষ্টি করে। ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতাতেই ৭১ আসে এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

কিন্তু বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলেও আমরা কাঙ্খিত স্বাধীনতা ও মুক্তি লাভ করতে পারিনি! মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খার সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে যে রাষ্ট্র গড়ে ওঠার কথা ছিলো সেদিকে না হেঁটে বরং গত ৫২ বছরের বেশি সময় ধরে এদেশের শাসকেরা এদেশকে উল্টো পথে নিয়ে গেছে। যার সর্বশেষ নজির বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসন। এখন মানুষের ভোটাধিকার কেঁড়ে নেয়া হয়েছে, বাক-স্বাধীনতা বলতে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। ভয়ংকরভাবে বেড়েছে হত্যা, ধর্ষণ, গুম, নিপীড়নের ঘটনা! শিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধি, পাঠ্যপুস্তক ও ইতিহাসকে করা হয়েছে দলীয়করণ, প্রবর্তন করা হয়েছে গনবিরোধী শিক্ষাক্রম।  

 

বিরোধী মত দমনে সরকারি বাহিনীর পাশাপাশি দলীয় ক্যাডার দিয়ে হামলা-মামলা করানো হচ্ছে। বিভিন্ন ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরাও এই ভয়াবহ পরিস্থিতির বাইরে নেই! 

 

এরকম দমবন্ধ পরিস্থিতি থেকে ছাত্র সমাজ থেকে শুরু করে দেশের আপামর মানুষ মুক্তি চায়, বাঁচতে চায়। 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *